শাহজাহান চৌধুরীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী

আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান চৌধুরীকে শোকজ (কারণ দর্শানোর নোটিশ) দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার স্বাক্ষরিত কারণ দর্শানোর নোটিশ সংক্রান্ত চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনার (শাহজাহান চৌধুরী) এই বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছে এবং বক্তব্যটি রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের পেশাদারত্ব, নিরপেক্ষতা ও মূল স্পিরিট স্পষ্টভাবে ব্যাহত করেছে। জামায়াত মনে করে, প্রশাসন পূর্ণ পেশাদারত্বের সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করবে, এখানে দলের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে বিভিন্ন সময়ে শাহজাহান এমন সাংগঠনিক ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণকারী ও শৃঙ্খলাবিরোধী বক্তব্য রেখেছেন। ফলে তাকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এমনকি জামায়াত আমিরও তাকে ডেকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এবং সতর্ক করেছেন। এতদসত্ত্বেও তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

চিঠিতে বলা হয়েছে, এ বক্তব্য প্রকাশের পর প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর থেকে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। দেশের কূটনৈতিক মহল থেকেও সরাসরি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে দেশ-বিদেশে দলের জনশক্তি এবং সাধারণ জনগণের মাঝেও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। এই বক্তব্যের কারণে সংগঠনের ভাবমর্যাদা গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি দলীয় গঠনতন্ত্র, নীতি, আদর্শ, শৃঙ্খলা ও দায়িত্বশীল রাজনৈতিক আচরণের পরিপন্থি।

এ কারণে জামায়াত আমিরের নির্দেশে তাকে এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে যে—কেন তার ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? তার লিখিত জবাব আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রদান করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়া গেলে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলাবিধি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে গত শনিবার (২২ নভেম্বর) চট্টগ্রামের জিইসি কনভেনশন হলে জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত নির্বাচনি দায়িত্বশীল সম্মেলনে জামায়াতের নেতা শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘যার যার নির্বাচনি এলাকায় প্রশাসনকে আমাদের আন্ডারে নিয়ে আসতে হবে। আমাদের কথায় উঠবে, আমাদের কথায় বসবে, আমাদের কথায় গ্রেফতার করবে, আমাদের কথায় মামলা করবে। পুলিশকে আপনার পেছনে পেছনে হাঁটতে হবে, থানার ওসি আপনার প্রোগ্রাম সকালে জেনে নিয়ে আপনাকে প্রটোকল দিবেন।’

তার এ মন্তব্য ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এই বিভাগের আরও সংবাদ পড়ুন

Back to top button