আমরা যে সিদ্ধান্ত নেবো সেখানে আমরা দৃঢ় থাকবো

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গণভোট নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, উপদেষ্টাদের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন হলে তিনি করবেন এবং আমরা যে সিদ্ধান্ত নেবো সেখানে আমরা দৃঢ় থাকবো। আর সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এদিন প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকের বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য ‘হতাশাব্যঞ্জক’ মন্তব্য করে আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘এই তীব্র বিরোধের মধ্যে কীভাবে সমঝোতার দলিল পাস হয়, এটা খুব দুরূহ একটা চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে এনে দিয়েছে।’ সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন এবং সরকার সেই সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, কিছু ভাইটাল প্রশ্নে তাদের আসলে ঐকমত্য হয় নাই। এর আগে আমরা জেনেছিলাম, বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আবার দেখলাম, দুই ধরনের বিরোধ বের হয়েছে। একটা হলো, কী পদ্ধতিতে পাস করা হবে। আরেকটা হচ্ছে, গণভোট কবে হবে। এত দৃঢ়, পরস্পরবিরোধী এবং উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল। আপনারা যদি এ রকম একটা ভূমিকা নেন তাহলে সরকার কী করবে। আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না, এতদিন আলোচনার পর আপনাদের যদি ঐকমত্য না আসে, তাহলে আমরা সত্যি কী করবো এটা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, কোনও রাজনৈতিক দল এককভাবে আমাদের আল্টিমেটাম বা জোর করার ব্যবস্থা করার মানে, তাদের মধ্যে ঐকমত্য নাই। তারা চাচ্ছেন, যেন এই সরকার তাদের দলীয় অবস্থান সমর্থন করে। দুর্ভাগ্যজনক, আলোচনার জন্য তাদের যথেষ্ট সময় দেওয়া হয়েছে। তারা যে অনৈক্য দেখাচ্ছেন, জুলাইয়ের চেতনাকে কোথায় নিয়ে গেছেন, বিবেচনা করা উচিত।
উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনৈক্যের বিষয় নিয়ে সাধারণ একটা আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে আইন উপদেষ্টা বলেন, ঐকমত্য কমিশন দুইটা বিকল্প দিয়েছে– একটা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ, গণভোট, ২৭০ দিনের মধ্যে না হলে সয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে। এটা কোনও নজির আছে কিনা বা আদৌ সম্ভব কিনা, আমরা দেখবো। আরেকটা হলো– এই দায়-দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া। এই দুই বিকল্পের মধ্যে কোনটা আসলে বেশি গ্রহণযোগ্য এটা নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ আছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, গণভোট নিয়ে বিরোধ তো তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এসব বিষয়ে আমাদের একটা সময় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। আমরা তাকে সহায়তা করার জন্য থাকবো। সিদ্ধান্ত নির্দিষ্ট কেউ নেবে না, এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নেবেন। আমাদের সঙ্গে পরামর্শের প্রয়োজন হলে তিনি করবেন এবং আমরা যে সিদ্ধান্ত নেবো সেখানে আমরা দৃঢ় থাকবো। আর সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত নেওয়া হবে।



